মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৬

"রবিবারে নৌকাডুবি উপন্যাস: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বর্ণিল প্রয়াশ"

"রবিবারে নৌকাডুবি উপন্যাস
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বর্ণিল প্রয়াশ"
 
নৌকাডুবি’ একটি ঘটনা বহুল উপন্যাস। কলকাতায় আইন পড়াকালীন হেমামালিনীর সঙ্গে রমেশের প্রেম হয়। পিতা ব্রজমোহনের বাল্যবন্ধু অকাল প্রয়াত ঈশানের কন্যা সুশীলার সঙ্গে রমেশের হঠাৎ করেই বিয়ে হয়, রমেশের অমতেই। নববধূকে নিয়ে নদীপথে আসার সময় হঠাৎ ঝড়ের কবলে পড়ে নৌকা বিপর্যস্ত হয়, যা নৌকাডুবি উপন্যাসের মূল কাহিনীর থ্রিলার। পরিবারের অন্যরা নৌকাডুবিতে হারিয়ে যায়। রমেশ জ্ঞান ফিরে পেয়ে অন্যদের খুঁজতে গিয়ে বালির-তটে লাল চেলী-পরা এক নববধূকে দেখতে পায়। এই বধূটির সঙ্গে দাম্পত্য সম্পর্ক নিবিড় হয়ে ওঠার মুখে রমেশ জানতে পারল যে, সে তার স্ত্রী সুশীলা নয়, কাহিনী আরও মর্মস্পর্শী হলো। অন্য কারো নববধূ ছিল কমলা। এই বালিকা বধূ কমলাকে রমেশ কলকাতার স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেয়। এই সকল নিয়তি ও বাস্তবতার নানা কাহিনী নিয়েই গড়ে উঠেছে "নৌকাডুবি"র কাহিনী। আবার পাঠকের কাছে রমেশ ও হেমামালিনীর প্রেমের পরিণয় রহস্যেই রয়ে যায়, যা বিশ্বকবির বুননে রহস্য ও বর্ণিলতার অসাধারণ মিশ্রণ।
 
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত বর্ণিল ‘নৌকাডুবি’ উপন্যাস থেকে কিছু উক্তি প্রিয় পাঠকের সাথে শেয়ার করলাম-...
(ক) মানুষ তো ফুল কিংবা প্রজাপতি মাত্র নয় যে, ভালো দেখার বিচারটাই সর্বাগ্রে তুলিতে হইবে ।
(খ) ভুল হইতে, বেসুর হইতে, অক্ষমতা হইতে আনন্দ পাইবার শক্তি ভালোবাসারই আছে ।
(গ) প্রয়োজন রাজার মতো আপনার পুরা সময় লয়-আর ভালবাসা কাঙ্কাল ।
(ঘ) কতকগুলি জিনিস আছে, যা আপনার ঝোকেই অগ্রসর হয়ে পড়ে, তাহাকে আর পশ্রয় দিতে হয় না – বাড়িতে বাড়িতে আপনিই বাড়াবাড়িতে গিয়া পৌছায় ।
(ঙ) যেখানে নির্ভরতাও নাই, স্বাধীনতাও নাই, সেখানে প্রাণ বাঁচে কী করিয়া ।
(চ) আমার সঙ্গে যাহার বোঝাপড়ার কোনো সম্পর্ক নাই তাহাকে বুঝিতে চেষ্ঠা করাই ধৃষ্টতা । কিন্তু পৃথিবীতে দৈবাৎ এমন এক একটি মানুষ মেলে দৃষ্টিপাত মাত্রই যাহার সঙ্গে সম্বন্ধ স্থির হইয়া যায়।
সুতরাং নির্মল ভালোবাসা, নির্মম নিয়তি, কঠিন বাস্তবতা, সামাজিক বন্ধন, পারিবারিক দাম্পত্য, দায়িত্ববোধ সর্বোপরি প্রণয়ের রহস্যময়তায় ভরপুর বিশ্বকবির নৌকাডুবি উপন্যাস। অসাধারণ অভিজ্ঞতা ও নিয়তির নির্মম বুনন নৌকাডুবি উপন্যাসে।
 
রবিবারে রবির সাথে
'নৌকাডুবি'তে আছি মিশে।