বুধবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৬

♥♥ বাউল রবীন্দ্রনাথকে বরণ ♥♥

♥♥ বাউল রবীন্দ্রনাথকে বরণ ♥♥
বাংলা সাহিত্যকে এত বিস্তৃতভাবে বিশ্বকবি দিয়ে গেছেন, যা বলার অপেক্ষা রাখে না। কি নেই যা নিয়ে তিনি কলম ধরেননি। কি নেই যা নিয়ে তিনি অনুভুতি প্রকাশ করেননি। কি নেই যা নিয়ে তার প্রেমে পড়া যায় না। কি নেই যা সাহিত্যকে বিকশিত করে না বিশেষ করে বাংলা সাহিত্যকে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরস্কার পাওয়ার দরকার ছিলো না, কিন্তু দরকার ছিলো বাংলা সাহিত্যের। পুরস্কার না পেলে হিন্দুরা বুঝতো না যে রবীন্দ্রনাথ কত বড়ো কবি; আর মুসলমানেরা রহিম, করিমকে দাবি করতো বাংলার শ্রেষ্ঠ কবি হিসেবে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা, গান ও ছোটগল্প কিংবা অন্য সব লেখা দেখে মনে হয়, যদি বিশ্ব তাকে সাহিত্যে আরও ১০ (দশ) বার নোবেল পুরস্কার দিত তাহলেও কম পড়ত- আমাদের কথা:
 
“রবিবারে রবির সাথে” পর্বে করি রবিকে সশ্রদ্ধ স্মরণ,
রবিবারে এবার বিষয় বাউল রবীন্দ্রনাথকে বরণ।
লোকসংগীতে বাউল বহুবার স্মরণ করেছেন রবি,
কবিতা ও গানে রবির স্বশ্রদ্ধ বাউলা ভক্তি।
রবীন্দ্রনাথের লেখায় বাউলা প্রভাব,
কবিতা ও গানে বাউল চর্চার নেই যে অভাব।

আজ রবিবারের রবির সাথে প্রথম পর্বে বাউল রবীন্দ্রনাথকে বরণ করা নিয়েই আজ কিছুটা সময় নষ্ট করব আপনাদের। বাউল প্রভাব সম্পর্কে রবি নিজেই বলেছেন আমার জ্ঞাত সারে ও অজ্ঞাত সারে বাউল ডুকেছে আমার লেখায়। নিন্দুকেরা বলেন তারা নাকি আবিষ্কার করেছেন রবি নাকি বাউলকে নকল করেন! আরে যেখানে বাউলকে রবি পছন্দ করেন, তার লেখায় বাউলের প্রভাব রয়েছে বলেন সেখানে নিন্দুকেরা কিভাবে আবিস্কার করেছেন, সব ভাওতাবাজি বা অপপ্রচার মাত্র। আমরা বলি-

নিন্দুকেরা বলছে রবি করেছে বাউলের নকল,
রবিতো বলেছেন আমার লেখায় জানায়-অজানায় ঢুকেছে বাউল।
যেখানে রবির সাবলীল স্বীকার,
সেখানে হল কিভাবে নিন্দুকের আবিস্কার।
হে নিন্দুক বন্ধ কর তোমার অপপ্রচার,
ভেঙ্গে ঐ অপপ্রচার রহিবে বাউল বিশ্বকবির ।
 
কথিত রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে উদ্দেশ্যে করি লালন বলেন-
'পারে যদি যাবি রবী গুরুর চরণ ভুলো না, গুরুর চরণ ভুল করিলে পারে যাওয়া ঘটবে না।'
 
লালন সঙ্গীতের দার্শনিক ও নান্দনিক প্রভাব যেমন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে প্রচন্ড

ভাবে আলোড়িত করে তুলেছিলো। তখন রবীন্দ্রনাথের চেতনার জগতে এক অভূতপূর্ব পরিবর্তন সাধিত হয়। হাল সংস্কৃতিতে লালিত কবি রবীন্দ্রনাথ ধীরে ধীরে রবীন্দ্র বাউলে পরিণত হন। প্রেম ও প্রকৃতির কবি ধীরে ধীরে ঈশ্বর কেন্দ্রিক ও মানবকেন্দ্রিক হয়ে ওঠেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা, গান, কবিতা, গল্প, নাটক সবই বাউল দর্শন এবং বাউল ভাবে প্রভাবিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ শুধু যে বাউল গানের সুরকেই নিয়েছেন তা নয়, তিনি অনেক ক্ষেত্রে অনেক বাউল গানের বাণীকেও গ্রহণ করেছেন। রবীন্দ্রনাথের গানে বাউল দর্শন এবং বাউল গানের কথা ও সুরের প্রভাব প্রত্যক্ষভাবে পড়ে। তাঁর প্রায় ৬৬টি গান বাউল সুরের আঙ্গিকে রচিত। বাউল সঙ্গীতের ভাষার সরলতা, ভাবের গভীরতা ও সুরের আবেগ রবীন্দ্রনাথকে টেনে এনেছে বাংলার সোঁদা মাটিতে। ১৯১৫ সালে রবীন্দ্রনাথ ফালগুনী নাটক রচনা করে সেখানে অন্ধ বাউল চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯১৬ সালে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর রবীন্দ্রনাথের একটি ছবি আঁকেন। ছবিটিতে দেখা যায় বাউল রবীন্দ্রনাথ একতারা হাতে বিভোর হয়ে নাচছেন।
 
বাউল রবিকে নিয়ে আমরা বলি-
রবি তোমায় স্মরণ করি লোকসংগীতের গহীনে,
বিশ্বকবির গানে ও প্রাণে বাউল মনের ভিতর দোলা আনে,
তোমার কবিতা ও গানে বাউলা প্রভাব, জীবনের সুপ্ত বাসনা,
বাউল কয় আমি কোথা পাবো তারে, রবি কয় আমার সোনার বাংলা!

বাউল রবীন্দ্রনাথকে বরণ করে বলছি শেষ কথা-
“শুভ্রতার নির্মল ছোয়ায় রবি হলো বাউল,
বাউলের সুরেলা মোহনায় প্রভাবিত বিশ্বকবি বলে সর্বকুল।”

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন