বুধবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৬

অপার বাউল ফকির লালন সাইয়ের ১২৬-তম তিরোধান দিবসে অতল শ্রদ্ধা

"লালন ফকির নামে একজন বাউল সাধক হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, জৈন ধর্মের সমন্বয় করে কী যেন একটা বলতে চেয়েছেন - আমাদের সবারই সেদিকে মনোযোগ দেওয়া উচিৎ।" -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

“সব লোকে কয়, লালন ফকির হিন্দু কি যবন।
লালন বলে, আমার আমি না জানি সন্ধান।".....

“সব লোকে কয়
লালন কি জাত সংসারে।
লালন বলে জাতের কি রূপ
দেখলাম না তা-নজরে।।"
 
তার কোন জাত নেই, ধর্ম নেই, তিনি হলেন মানুষ। তিনি সত্যিই অতুলনীয়, তাঁর যা সৃষ্টিকর্ম রয়েছে, তাতে তার অনেক বড় সম্মান পাওনা, কিন্তু দুর্ভাগ্য বা সৌভাগ্য যাই হোক তিনি তা পাননি। এই মরমী সাধকের রয়েছে অজস্র অমূল্য সৃষ্টি। তার সঙ্গে কাউকে তুলনা করা চলেনা। তার তুলনা শুধু তিনি নিজেই। কিন্তু যা সবসময় হয় আমাদের দেশে, গুণীজন পায়না যোগ্য সম্মান, মর্যাদা। অবশ্য তিনি এসবের অনেক উর্ধ্বে ছিলেন। তিনি এ ধরণের সম্মান বা মর্যাদার কাঙ্গালী ছিলেন না। তিনি স্বমহিমায় উজ্জ্বল ছিলেন। তাইতো তিনি গেয়েছেন-

'আমি অপার হয়ে বসে আছি
ও হে দয়াময়,
পারে লয়ে যাও আমায়।।
আমি একা রইলাম ঘাটে
ভানু সে বসিল পাটে-
(আমি) তোমা বিনে ঘোর সংকটে
না দেখি উপায়।।
নাই আমার ভজন-সাধন
চিরদিন কুপথে গমন-
নাম শুনেছি পতিত-পাবন
তাইতে দিই দোহাই।।
অগতির না দিলে গতি
ঐ নামে রবে অখ্যাতি-
লালন কয়, অকুলের পতি
কে বলবে তোমায়।।'
 
সেই অপার বাউল ফকির লালন সাইয়ের তিরোধান দিবসে (আজ) অতল শ্রদ্ধা জানাই....
 
সোনার মানুষ ভাসছে রসে
যে জেনেছে রসপন্থি সে
দেখিতে পায় অনায়াসে।।
তিনশো ষাট রসের নদী
বেগে ধায় ব্রহ্মাণ্ড ভেধী।
তার মাঝে রূপ নিরবধি
ঝলক দিচ্ছে এই মানুষে।।
মাতা পিতার নাই ঠিকানা
অচিন দেশে বসত খানা।
আজগুবি তার আওনা যাওনা
কারণবারির যোগ বিশেষে।।
অমাবস্যায় চন্দ্র উদয়
দেখতে যার বাসনা হৃদয়।
লালন বলে থেকো সদাই
ত্রিবেনীর ঘাটে বসে।।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন